আচ্ছা, কখনো ভেবে দেখেছ, আমরা মরা সাপ গুলো দেখতে কেন পাই না? যে সাপ গুলো কোন দুর্ঘটনায় মারা পড়ে বা কেউ নিজে হাতে মেরে ফেলল সেই কথা আলাদা, কিন্তু লাখো প্রজাতীর সাপ রয়েছে, আশেপাশে হাজারো জীবিত সাপ, কিন্তু সাপ মারা গেলে নজরে কেন আসে না?
ব্যাপার টা আজব না? বিশেষ করে কিং কোবরা সাপ, এদের মরা অবস্থায় দেখতেই পাওয়া যায় না! এর পেছনে এক মজার গল্প রয়েছে…
যখনই সাপ মারা যাবার পর্যায়ে চলে আসে, বা সে অনুধাবন করে তার মরে যাওয়া উচিৎ বা সে মরতে চায়, সাপটি নিজের রেগুলার বসবাসের জায়গা ছেড়ে নিজের মরার জন্য আলাদা কোন একটা জায়গা বেছে নেয়। মরার জায়গা পছন্দ করার পরে সাপটি খাওয়া দাওয়া ছেড়ে দেয়। এভাবে না খেয়ে সাপটি পড়ে থাকে আর মরার অপেক্ষা করে, আর সপ্তাহ ১-২ পরে মরার সময় হয় আর সাপ টি মরে যায়…
এখন সাপের মৃত্যু কেন এভাবে ঘটে বিশেষ করে কোবরার সে এক রহস্যময় ব্যাপার, কিন্তু সাপ হয়েও জানে বন্দীত্ব অবস্থায় মরে যাওয়া খুব সহজ।
নিজেকে বাকি দুনিয়া থেকে আলাদা করে ফেলা আর না খেয়ে কোন ভাবে মরে যাওয়া এক প্রকারের মৃত্যু। কিন্তু মৃত্যু আরো অনেক প্রকারের হতে পারে। শারীরিক ভাবে মরে যাওয়ার পূর্বেই মৃত্যু কয়েকবার সংঘটিত হতে পারে।
আমি কেমন অনুভব করি, আমি কেমন অনুভূতি কামনা করি, আমি কাকে ভালোবাসি, আমি কাকে কিভাবে কাছে চাই এই সবকিছুই আমার নিজ অস্তিত্বের অংশ। আমার হৃদয়ের অনুভূতি গুলো একেকটা সেই অংশ যা আমাকে তৈরি করে। কিন্তু যখন আমি কোন অনুভূতি কে আমার হতে মুছে ফেলতে চাইবো, সেটার সাথে আমি নিজের অস্তিত্ব অনুভব করি, সেটা সহজ নয়। আমার শরীর আর মনের কোন অংশ সেটাতে সায় দেবে না। আর আমার অনুভব করার কোন ধরণকে বাদ দেওয়া বা ভুলে যেতে চাওয়া মানে আমার নিজের ঐ অংশের মৃত্যু।
আর তারপর আমার একেকটা ইচ্ছার মৃত্যু। একুরিয়াম এ তো মাছ এমনিতেই বেচে থাকবে না, তাই না? ওতে দরকার পানিতে পর্যাপ্ত অক্সিজেন আর খাবার এর সরবরাহ। আমার অন্তর্নিহিত চাওয়া গুলো বিনা অক্সিজেনের এক প্রতিকূলতার সমুদ্রে ভেসে বেরোচ্ছে, আর যার পরিণতি এক আবদ্ধ মৃত্যু। শরীরের মৃত্যু তো একবার হয়, সত্যি বলতে শরীর যখন মারা যায়, যায় আসে না, হয়তো ১ সেকেন্ড আগে এক ধাক্কা উনুভূত হয়, কিন্তু অন্তরের মৃত্যু প্রত্যেক সেকেন্ড এ ভোগায়, অগুনতি বার খোঁচায়, বারবার মারে, আর এটা এভাবেই চলতে থাকে যতক্ষণ শরীর না মরে।
এখন যে স্বপ্নে আমি তৈরি, সেই স্বপ্ন গুলোকেই নিজ থেকে দুর সম্পর্ক বজায় রাখতে হচ্ছে। আমার থেকে দুর, আমার শরীর থেকে দূর, আমর অস্তিত্ব থেকে দূর। কিন্তু যা আমাকে তৈরি করে তার থেকে বিচ্ছিন্নতা আমাকে কতটা সুখী করবে? এ এক কঠোর অস্তিত্ব রক্ষার খেলা I
এটা আমি, আমার চাওয়া গুলো আমি, আমার স্মৃতি গুলো আমি। আর এগুলোর কিছু একটা টেনে আলাদা করবে মানে আমি বিভক্ত হয়ে পড়বো, একেকটা টুকরোই ছিটকে পড়বো। আর শেষ অংশ যা বেচে থাকবে তা নিজেকে আবদ্ধ করে মারা আত্মহত্যা করবে। অবশেষে এই শরীর বেজান আত্তাবিহীন কিছু একটায় পরিণত হবে যার নাম আমার জানা নেই।